টানা সাড়ে চার মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) খুলেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। আজ শুক্রবার (২০ আগস্ট) সপ্তাহের ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে সৈকতে পর্যটক আসতে শুরু করেছে।

দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা আর নীরবতা ভেঙে সমুদ্রস্নান, বালিয়াড়িতে দৌড়ঝাঁপ, বিচ বাইক, ওয়াটার বাইক, ঘোড়ায় চড়ে আনন্দে মেতে উঠেছে তারা। নববধূকে নিয়ে এই প্রথম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে এনেছেন গাজীপুরের সাইদুল ইসলাম। সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে মুগ্ধতার আবেশে নববধূ সুরাইয়া শাম্মী বলেন, ‘জীবনের এই প্রথম কক্সবাজারে আসা। সৈকতের চিকচিক বালি আর সমুদ্রের জলরাশির কাছে পৃথিবীর সব সুন্দর যেন ম্লান মনে হয়েছে আমার। আমি মনে করি, সমুদ্র সৈকতের যে সৌন্দর্য প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের অবশ্যই আকর্ষণ করবে।

ঢাকার মিরপুরের ‘বন্ধু মহল’ নামের সংগঠনের এক ঝাঁক বন্ধুরা বলেন, ‘প্রতিবছর কক্সবাজার ট্যুরের জন্য আমাদের এই সংগঠন খোলা হয়েছে। সময়-সুযোগ হলে সবাই মিলে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেই। কক্সবাজারের মতো সৌন্দর্য ও খোলামেলা জায়গায় বেড়াতে আসতে পেরে ভালো লাগছে।’ কুমিল্লা জিলা স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র ফারদিন ওবায়েদ বলেন, ‘ঘোড়ায় চড়া আমার শখ। স্কুল বন্ধ থাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে কক্সবাজারে বেড়াতে এলাম। অনেক মজা করছি, আর ঘোড়ায় চড়ছি।

শীত মৌসুমে কক্সবাজারে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। এ সময় দেশি-বিদেশি লাখেরও বেশি পর্যটকে মুখর হয়ে ওঠে সমুদ্র সৈকতে। নিয়ম অনুযায়ী এখন পর্যটন মৌসুম নয়। যে কারণে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা পুরো প্রস্তুতি নেননি। তারা ভাবছেন করোনার প্রকোপ বেড়ে আবারও যদি লকডাউনে সমুদ্র সৈকত বন্ধ হয়ে লোকসান গুনতে হয়। করোনা পরিস্থিতিতে গত ১ এপ্রিল থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় কক্সবাজারের সকল পর্যটন স্পট। ফলে ৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিলো। একই সঙ্গে বন্ধ ছিল সব পর্যটনকেন্দ্র, হোটেল-মোটেল, রেস্তোঁরা, বার্মিজ দোকানসহ সব ধরনের পর্যটন ব্যবসা।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করা হচ্ছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ পর্যটনের সকল বিষয় নিয়ে জেলা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ সচেতন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা পর্যটন এলাকার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সজাগ রয়েছে। জোয়ার-ভাটা দেখে সমুদ্রে নামার জন্য এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য মাইকিং করে সকলকে সচেতন করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, দীর্ঘদিন পর অবশেষে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতন করা হচ্ছে। হোটেল-মোটেল ও পর্যটনে সংশ্লিষ্ট সকলেই যদি স্বাস্থবিধি কিংবা সরকারি নির্দেশনা না মানে, তাহলে পুনরায় পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।